ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা PDF [2024 - 2025] | Cyclone name list in Bengali PDF
আজকে তোমাদের সাথে বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা PDF [2024 - 2025] শেয়ার করলাম যেটি তোমাদের জিকে আরও মজবুত করবে এবং বিভিন্ন সরকারি ও প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণেও সহায়তা করবে। আজকের পোস্টে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু ঘূর্ণিঝড়ের নাম তালিকা রূপে দেওয়া হল।
এছাড়াও, কীভাবে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয় এবং কেন অধিকাংশ ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগর এর মধ্যে সৃষ্টি হয় সেই তথ্যও জানতে পারবেন।
ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা
সাল | ঘূর্ণিঝড়ের নাম | নাম প্রস্তাবকারী দেশ |
---|---|---|
২০০৪ | পাইরান | ইরান |
২০০৭ | ইয়েমিন | ওমান |
২০০৯ | আইলা | মালদ্বীপ |
২০১০ | লায়লা | পাকিস্তান |
২০১০ | জল | ভারত |
২০১৩ | পাইলিন | থাইল্যান্ড |
২০১৪ | হুদহুদ | ওমান |
২০১৪ | কায়ান্ট | মিয়ানমার |
২০১৫ | রোআনু | শ্রীলঙ্কা |
২০১৬ | বায়ু | পাকিস্তান |
২০১৭ | ওখি | বাংলাদেশ |
২০১৮ | তিতলি | পাকিস্তান |
২০১৮ | গাজা | থাইল্যান্ড |
২০১৯ | পবন | শ্রীলঙ্কা |
২০১৯ | ফণী | বাংলাদেশ |
২০১৯ | বুলবুল | পাকিস্তান |
২০২০ | আম্ফান | থাইল্যান্ড |
২০২০ | নিসর্গ | বাংলাদেশ |
২০২০ | গতি | ভারত |
২০২০ | নিভার | ইরান |
২০২১ | তকতে | মিয়ানমার |
২০২১ | ইয়াস | ওমান |
২০২১ | গুলাব | পাকিস্তান |
২০২২ | অশনি | শ্রীলঙ্কা |
২০২২ | সিত্রাং | থাইল্যান্ড |
২০২৩ | মোকা | ইয়েমেন |
২০২৩ | বিপর্যয় | বাংলাদেশ |
২০২৪ | রেমাল | ওমান |
২০২৪ | ডানা বা দানা | ওমান |
ঘূর্ণিঝড় হলো প্রাকৃতিক এক দুর্যোগ যা অত্যন্ত শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ, প্রবল বৃষ্টি এবং বজ্রপাতের সাথে সাগর বা মহাসাগরের জলীয় বাষ্প থেকে সৃষ্টি হয়। এদের নামকরণ পদ্ধতি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত, যা সহজে পরিচিতি পেতে সাহায্য করে এবং পরিস্থিতি অনুসারে সতর্কবার্তা প্রদান সহজতর করে।
কিভাবে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়?
সম্প্রতি সাইক্লোন ডানা ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হেনেছে। তবে আপনি কি জানেন, ডানার মতো সাইক্লোনগুলোর নামকরণ কীভাবে হয়? সাইক্লোনের নামকরণে কিছু নির্দিষ্ট নিয়মাবলী মেনে করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক নিরপেক্ষতা, উচ্চারণে সহজ হওয়া এবং সর্বাধিক আট অক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা।
বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় গুলির নামকরণের দায়িত্ব ভার ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (IMD) পালন করে। এই নামকরণের পদ্ধতি ২০০০ সালে প্রবর্তিত হয়, সেসময়ে বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলো একত্রিত হয়ে এই পদ্ধতি তৈরি করে।
পরে, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইয়েমেনও এই দলে যোগ দেয়। ২০২০ সালে WMO-ESCAP-এর ট্রপিক্যাল সাইক্লোন প্যানেলের তত্ত্বাবধানে, IMD মোট ১৬৯টি সাইক্লোন নামের একটি তালিকা প্রকাশ করে। সাইক্লোনের সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নামগুলো ধারাবাহিকভাবে বরাদ্দ করা হয়। মজার বিষয় হলো, "ডানা" নামটি ওমান থেকে দেওয়া হয়েছে।
অধিকাংশ ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টির কারণ
আরব সাগরের তুলনায় বঙ্গোপসাগরে প্রায় চার গুণ বেশি সাইক্লোন সৃষ্টি হয়। বিশ্বব্যাপী সাইক্লোন সম্পর্কিত মোট মৃত্যুর ৮০ শতাংশই এখান থেকে ঘটে এবং এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় উপসাগর। এই ঘটনার পেছনে চারটি প্রধান কারণ রয়েছে।
১. তাপমাত্রা: সাইক্লোন গঠনের জন্য সমুদ্র পৃষ্ঠের ন্যূনতম তাপমাত্রা প্রায় ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হয়, যা বঙ্গোপসাগরে প্রায় সবসময়ই বজায় থাকে।
২. উষ্ণ ও শীতল জল: গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্র নদীর শীতল জল এখানে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়, যা উষ্ণ জলের সাথে সহজে মিশতে পারে না। এই কারণে, সাইক্লোনিক ডিসটার্বেন্স বা অশান্তি সৃষ্টি হতে থাকে।
৩. উপকূলের আকার: বঙ্গোপসাগরের উপকূলরেখা লম্বা এবং বাঁকানো, যার ফলে বাতাস এখানে প্রবেশ করলেই তার গতি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যা একটি সাইক্লোন গঠনে সহায়তা করে।
৪. প্যাসিফিক মহাসাগরের সংযোগ: বঙ্গোপসাগর এবং প্যাসিফিক মহাসাগরের মাঝে কোনো বড় স্থলভাগ নেই, যার ফলে প্যাসিফিক থেকে আসা সাইক্লোনিক বাতাস এখানে প্রবেশ করে এবং সাইক্লোন সৃষ্টি করে।
ঘূর্ণিঝড়ের কিছু উল্লেখযোগ্য নাম ও তাদের অর্থ
নাম | অর্থ | সাল | দেশের প্রস্তাব |
---|---|---|---|
আম্ফান | আকাশ | ২০২০ | থাইল্যান্ড |
নিসর্গ | প্রকৃতি | ২০২০ | বাংলাদেশ |
বুরেভী | পানির ঢেউ | ২০২০ | মালদ্বীপ |
তকত | শক্তি | ২০২১ | মিয়ানমার |
যাস | হতবাক করা | ২০২১ | ওমান |
গুলাব | গোলাপ | ২০২১ | পাকিস্তান |
জাওয়াদ | উদার | ২০২১ | সৌদি আরব |
অশনি | সতর্কতা | ২০২২ | শ্রীলঙ্কা |
সিত্রাং | পাতা | ২০২২ | থাইল্যান্ড |
সবশেষে, আজকের পোস্টে ঘূর্ণিঝড়ে তালিকার পাশাপাশি কীভাবে ঘূর্ণিঝড় এর নাম দেওয়া হয় এবং কেন বঙ্গোপসাগরেই ঘূর্ণিঝড় এর প্রকোপ বেশি দেখা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনাদের পোস্টটি ভালো লাগবে।